বোধনের তাৎপর্য

আমরা জানি, আশ্বিনের শুক্লা ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বিল্বশাখায় দেবীর বোধন হল শারদীয়া দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই বোধনকে কেন অকালবোধন বলা হয়, কেন এর এত গুরুত্ব, তার ইতিহাসই বা কি? এই প্রসঙ্গে জানতে গেলে আমাদের পৌরাণিক তথ্যের দিকে দেখতে হবে। আমরা জানি যে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র রাবণ বধের জন্য এই অকালবোধন করেছিলেন। বোধন কালে যে মন্ত্র উচ্চারিত হয়, বলা হয়েছে যে, “ওঁ ঐং রাবণস্য বধার্থায় রামস্য অনুগ্রহায় চ। অকালে ব্রহ্মনা বোধো দেব্যাস্তয়ী পুরা।” এবার এখানে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, মহামায়া তিনি তো আদ্যা শক্তি। যাঁর হাতে জগত সৃষ্টি, তাঁর আবার জাগরণে বোধনের কি প্রয়োজন? এক কথায় বলতে গেলে যদি আমাদের কোন বস্তুর অভাববোধ হলে তার উপরে আমরা সেই চৈতন্যময়ী সত্ত্বা আরোপ করে তাকে পাওয়ার চেষ্টায় হল বোধন। এক কথায় বোধন শব্দের অর্থ নিজের বিবেক চেতনা জাগিয়ে তোলা, সে সামাজিক জাগা হোক বা মানসিক দিক থেকে হোক অর্থাৎ বোধন এই শব্দটির তাৎপর্য তখনই গুরুত্ব পাবে যদি আমরা সামাজিক অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে উঠি। যদি আমরা আমাদের বিবেককে জাগ্রত করতে পারি তবে এই বোধন সার্থক হবে।
← Back to This Year’s Articles