বোধের উন্মেষ

'বোধন' শব্দের একটি অর্থ বোধকরণ। এই বোধ নিছক চেতনা নয়। বরং বোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিবেক। ঠিক-ভুলের জ্ঞানহীন কোনও মানুষকে যথার্থ বোধযুক্ত বলা যায় না। এখন সপরিবার দেবী দুর্গার ধুমধাম করে পূজা করেও কি আমাদের মধ্যে এই বোধের যথাযথ উন্মেষ হচ্ছে? বর্তমানে অপরের প্রতি সহমর্মিতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। বরং উল্টোদিকে কিছু মানুষ অন্যের দুঃখে উল্লসিত হয়। দেবদেবীর বাহন পূজিত হলেও, অনেকে মনুষ্যেতর প্রাণীদের ওপর অকারণ নৃশংস অত্যাচার করে পৈশাচিক আনন্দ পায়। একদিকে নবপত্রিকার পূজা ও অন্যদিকে নিছক একটা জমকালো কিন্তু অস্থায়ী থিম বানানোর জন্য পরিবেশদূষণ বড়ো বেমানান। যাঁরা সাড়ম্বরে জগজ্জনীর পূজা করেন, তাঁদের অনেকেই আবার উঠতে-বসতে এমন কিছু অপশব্দ প্রয়োগ করেন, যেগুলি মা-বোনেদের পক্ষে অসম্মানজনক। পূজামণ্ডপে দেবী সংক্রান্ত আগমনী ইত্যাদি গানের পরিবর্তে নিম্নরুচির গান বাজানো বা বিসর্জনের মূহুর্তে ডিজে সহযোগে উদ্দাম নৃত্য সমাজের বর্তমান মানসিকতাকে বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু এখনও জগতে অনেক বিবেকবান মানুষ আছেন। তাই আশা ফুরিয়ে যায় নি। মা চৈতন্যকারিণী যেন আমাদের মনের কুপ্রবৃত্তিরূপ তমসাকে দূরীভূত করে আমাদের মনে শুভবুদ্ধির জাগরণ ঘটান— এটাই প্রার্থনা।
← Back to This Year’s Articles